ভাইরাক্স ট্যাবলেট (virux-200) স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের এসাইক্লোভির গ্রুপের ঔষধ। ২০০ ও ৪০০ মিলিগ্রাম করে ২ টি ফরম্যাটের ট্যাবলেট হয়। এবং সাসপেনশন প্রতি ৫ মিলিতে ২০০ মিগ্রা থাকে। তাছাড়া ভাইরাক্স ক্রিম প্রতি ১ গ্রামে ৫০ মিগ্রা এসাইক্লোভির আছে।
ভাইরাক্স এর ফার্মাকোলজি
এ্যাসাইক্লোভির (virux-200) একটি সিনথেটিক পিউরিন জাতীয় ওষুধ। এটি হারপেস সিমপ্লেক্স ভাইরাস এবং ভেরিসেলা জোস্টার এর বিরুদ্ধে কার্যক্ষম। এ্যাসাইক্লোভির ভাইরাস এর ডি এন এ সিনথেসিস এ বাঁধা দিয়ে বংশ বিস্তার রোধ করে। হারপেস ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত কোষে এ্যাসাইক্লোভির প্রথমে ভাইরাসের থায়ামিডিন কাইনেজ দ্বারা পরিবর্তিত হয়ে এ্যাসাইক্লোভির মনোফসফেট এ পরিনত হয়। এই মনোফসফেট আবার কোষের গুয়ানায়লেট কাইনেজ দ্বারা ফসফোরায়লেটেড হয়ে ডাইফসফেট এ পরিনত হয়। এ্যাসাইক্লোভির ডাইফসফেট কোষের অন্যান্য এনজাইম দ্বারা ট্রাইফসফেট এ রূপান্তরিত হয়।
ভাইরাক্স ট্যাবলেট কিভাবে কাজ করে
এ্যাসাইক্লোভির ট্রাইফসফেট (virux-200)অন্ত্রনালী হতে ১৫-৩০ % ওষুধ বিশোষিত হয় এবং চূড়ান্ত প্লাজমা ঘনত্বে আসতে ১.৫ থেকে ২ ঘন্টা সময় লাগে। এটা শরীরের বিভিন্ন কলা ও তরল পদার্থ যেমন মস্তিষ্ক, স্যালাইভা, ফুসফুস, লিভার, পেশী, প্লীহা, ইউটেরাস, ভ্যাজাইনাল মিউকোসা এর নিঃসরন, সিএসএফ এবং হারপেটিক ভেসিকিউলার তরল পদার্থে পর্যাপ্ত পরিমাণে ছড়িয়ে পড়ে। এ্যাসাইক্লোভির গ্লোমেরুলার ফিলট্রেশন এবং টিবিউলার নিঃসরনের মাধ্যমে কিডনি হতে মূত্রের সাথে নিঃসৃত হয়।
ভাইরাক্স কিসের ঔষধ
ভাইরাক্স হারপেস সিমপ্লেক্স ভাইরাস (টাইপ ১ এবং টাইপ ২) এবং ভেরিসেলা জোস্টার ভাইরাস (হারপেস জোস্টার এবং চিকেনপক্স) এর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। ভাইরাক্স ত্বক ও মিউকাস মেমব্রেনের হারপেস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের সংক্রমণ যেমন প্রারম্ভিক ও রিকারেন্ট জেনিটাল হারপেস এবং হারপেস ল্যাবিয়ালিস এর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় । ভাইরাক্স® ইমিউনোকমপ্রোমাইজ্ড রোগীদের হারপেস সিমপ্লেক্স সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
ভাইরাক্স ট্যাবলেট সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
“ভাইরাক্স” ট্যাবলেট (virux-200) এবং সাস্পেনশন/সিরাপ- হারপেস সিমপ্লেক্স এর চিকিৎসা: ২০০ মি.গ্রা. করে দিনে ৫ বার সাধারণত ৫ দিন। ইমিউনোকমপ্রোমাইজ্ড রোগীদের ক্ষেত্রে ৪০০ মি.গ্রা. দিনে ৫ বার সাধারণত ৫ দিন, (চিকিৎসা দীর্ঘায়িত করতে হবে যদি চিকিৎসাকালীন সময়ে নতুন গোটা দেখা যায় বা রোগ সম্পূর্ণ ভালো না হয়)
ইমিউনোকমপ্রোমাইজ্ড রোগীদের জেনিটাল হারপেসের ক্ষেত্রে মাত্রা ৮০০ মি.গ্রা . দিনে ৫ বার অথবা রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
২ বছরের কম বয়সের শিশুদের জন্য পূর্ণবয়স্কদের অর্ধেক মাত্রা এবং ২ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের জন্য পূর্ণবয়স্কদের মাত্রা প্রযোজ্য হবে।
হারপেস সিমপ্লেক্স এর চিকিৎসায়- (পূনঃআক্রমন রোধে) ২০০ মি.গ্রা. করে দিনে ৪ বার অথবা ৪০০ মি.গ্রা . করে দিনে ২ বার, সম্ভব হলে মাত্রা কমিয়ে ২০০ মি.গ্রা . করে দিনে ২ বা ৩ বার এবং প্রতি ৬-১২ মাস অন্তর চিকিৎসা বন্ধ করা যেতে পারে।
২ বছরের কম বয়সের শিশুদের জন্য পূর্ণবয়স্কদের অর্ধেক মাত্রা এবং ২ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের জন্য পূর্ণবয়স্কদের মাত্রা প্রযোজ্য হবে।
ইমিউনোকমপ্রোমাইজ্ড রোগীদের হারপেস সিমপ্লেক্স এর প্রতিরোধী চিকিৎসায়- ২০০ মি.গ্রা . থেকে ৪০০ মি.গ্রা . দিনে ৪ বার।
২ বছরের কম বয়সের শিশুদের জন্য পূর্ণ বয়স্কদের অর্ধেক মাত্রা এবং ২ বছরের বেশি বয়সের শিশুদের জন্য পূর্ণবয়স্কদের মাত্রা প্রযোজ্য হবে।
ভেরিসেলা (চিকেন পক্স) এর চিকিৎসায়- পূর্ণবয়স্ক এবং ৪০ কেজি এর বেশি ওজনের রোগী হলে, ৮০০ মি.গ্রা. করে দিনে ৪ বার ৫ দিন। ৪০ কেজির কম ওজনের শিশু- ২০ মি.গ্রা. / প্রতি কেজি (সর্বোচ্চ ৮০০ মি.গ্রা ) করে প্রতি ডোজে দিনে ৪ বার (৮০ মি.গ্রা. / কেজি/দিনে) ৫ দিন । অথবা ১ মাস
২ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে- প্রতিদিন ২০০ মি.গ্রা. ৪ বার করে ৫ দিন।
২-৫ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ৪০০ মি.গ্রা . ৪ বার করে ৫ দিন। ৬-১২ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে : প্রতিদিন ৮০০ মি.গ্রা ৪ বার করে ৫ দিন।
হারপেস জোস্টার এর চিকিৎসায়: ৮০০ মি.গ্রা . দিনে ৫ বার ৭ দিন।
প্রাথমিক রেকটাল হারপেস (প্রোকটাইটিস) এর চিকিৎসা : ৪০০ মি.গ্রা . দিনে ৫ বার ১০ দিন বা যতক্ষণ পর্যন্ত ক্লিনিক্যাল সমাধান না আসে ততক্ষণ চিকিৎসা চালিয়ে যাবার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বৃক্কীয় অকার্যকারিতা- যে সকল রোগীর বৃক্কীয় অকার্যকারিতা জনিত সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে মাত্রা কমাতে হবে।
ভাইরাক্স ক্রীম ব্যবহারের নিয়ম
আক্রান্ত স্থানে দৈনিক ৫ বার করে ৫-১০ দিন লাগাতে হবে ।
গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানকালে ভাইরাক্স কি খাওয়া যাবে?
প্রেগন্যান্সি ক্যাটাগরি ‘বি’। যখন ভ্রুণের ক্ষতির তুলনায় সুস্থতার অধিক নিশ্চয়তা যুক্তিসঙ্গত প্রমানিত হবে তখনই এ্যাসাইক্লোভির (ভাইরাক্স) দেয়া যেতে পারে।
স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
প্রতি নির্দেশনা– যে সব রোগীদের এ্যাসাইক্লোভির এর প্রতি অতিসংবেদনশীলতা থাকে তাদের ক্ষেত্রে এটা ব্যবহার করা যাবে না।
সতর্কতা– বৃদ্ধের কার্যক্ষমতার সমস্যা জনিত রোগীদের এ্যাসাইক্লোভির সেবনে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং ক্রিয়েটিনিন ক্লিয়ারেন্সের উপর ভিত্তি করে তাদের মাত্রা সমন্বয় করা উচিত।
ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন রক্তে নিউট্রোফিল এর সংখ্যা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
অন্য ওষুধের সাথে প্রতিক্রিয়া প্রোবেনেসিড এ্যাসাইক্লোভির এর নিঃসরণ কমিয়ে দেয় এবং এ কারণে এর প্লাজমা ঘনত্ব ও বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
ভাইরাক্স এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি
চুলকানি , অন্ত্রনালীর অসুবিধা , বিলিরুবিন ও লিভার সংক্রান্ত এনজাইম বৃদ্ধি পাওয়া , রক্তে ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন এর পরিমান বৃদ্ধি পাওয়া , রক্তে বিভিন্ন উপকরণ কমে যাওয়া , মাথাব্যথা , স্নায়ুবিক প্রতিক্রিয়া , ক্লান্তি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।